ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইতিমধ্যেই এস.এস.সির ফল প্রকাশিত হয়েছে।অনেকে ভালো করেছো আবার অনেকে খারাপ করেছো। ঠিক খারাপ করেছো বলা উচিৎ হচ্ছেনা, আসলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল করতে পারোনি।এই নিয়ে হয়তো অনেকে মন খারাপ করে বসে আছো।
কিন্তু মন খারাপ করে বসে থাকলে তো আর চলবে না। তোমাদেরকে এখন কলেজ ভর্তির জন্য প্রিপারেশন নিতে হবে। কিন্তু,কলেজে ভর্তি হবার ক্ষেত্রে আমরা বেশ কিছু ভুল করে ফেলি,যে ভুলগুলির কারণে আমাদেরকে পরবর্তী সময়ে পস্তাতে হয়।
আজকে আমরা আলোচনা করব কলেজ ভর্তির সময় তোমার করনীয় কী তা নিয়ে, যাতে করে কলেজ ভর্তির সময় তুমি এই ভুলগুলো পুনরাবৃত্তি না করো।
প্রযুক্তির আধুনিকায়নের কারণে তোমরা বেশিরভাগই মোবাইল এর মাধ্যমে কলেজ সিলেকশন এর কাজটি করে থাকো। যার ফলশ্রুতিতে বেশ কিছু ভুল হয়ে যায়।
অনেকে দেখা যায় তাড়াহুড়োর কারণে ভুল কলেজ সিলেক্ট করে ফেলে। আবার অনেকে কলেজ ঠিকই সিলেক্ট করলেও ভুল শাখা সিলেক্ট করে ফেলে। দেখা যাচ্ছে তুমি কোন কলেজের মিরপুর শাখায় পড়তে চাও কিন্তু ভুলক্রমে যাত্রাবাড়ী শাখা সিলেক্ট করে ফেলেছ। তাই কলেজ সিলেকশনের ক্ষেত্রে এই প্রসেসটি খুবই ঠান্ডা মাথায় সম্পন্ন করতে হবে। মনে রেখো, একটি ভুল আগামী দুই বছরে কান্না!!
তোমরা সকলেই জানো, তোমাদের রেজাল্ট অনুসারে তোমাদেরকে কলেজ বরাদ্দ দেয়া হয়।তাই প্রায়োরিটি লিস্ট করার সময় তোমার টোটাল মার্কস অনুযায়ী তুমি কোন কলেজের জন্য যোগ্য সেটি বিবেচনায় রেখে কলেজ সিলেকশন দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুবিধার্থে তোমার আশেপাশের কয়েকজনের রেজাল্ট জিজ্ঞেস করতে পারো। চাইলে সিনিয়রদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারো।
তোমরা সবাই জানো এইচএসসির সময়টা যদিও দুই বছর বলা হয়ে থাকে।কিন্তু আদতে তোমরা কিন্তু সময় পাও ১৬ থেকে ১৭ মাস। এই ১৬ থেকে ১৭মাসে তোমাদেরকে বিশাল একটা সিলেবাস কভার করতে হয়। যার কারনে তোমাদেরকে এটা খেয়াল রাখতে হবে কলেজ থেকে বাসার দূরত্ব কত দূর। এছাড়াও যাতায়াতের সুযোগ সুবিধার ব্যাপারটি ও মাথায় রাখা উচিত
আমাদের কলেজগুলোতে টিচারেরা অনেক ভালো পড়ান। কিন্তু তারপরেও প্রায় সকলেরই বাইরে প্রাইভেট টিউশন পড়ার প্রয়োজন হয়। এইচএসসির শিক্ষার্থীদের সাথে প্রাইভেট প্রায় ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। যার কারণে তোমার কলেজ চয়েজের ক্ষেত্রে এটাও মাথায় রাখতে হবে সেখানে পর্যাপ্ত প্রাইভেট টিউশনের সুযোগ সুবিধা আছে কিনা? বাইরে যারা প্রাইভেট টিউশন পড়ান, তাদের পড়ানোর মান কেমন?প্রাইভেট টিউশনের জন্য পর্যাপ্ত সময় ম্যানেজ করতে পারবে কিনা? ইত্যাদি নানান বিষয় মাথায় রাখতে হবে কলেজ চয়েজ দেবার ক্ষেত্রে।
কলেজ চয়েজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি, সেটি হল কলেজের পড়ালেখার মান। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কলেজের পূর্ববর্তী বছরগুলোর রেজাল্টের হার কেমন।
এছাড়া শিক্ষকগণ কেমন পড়ান এটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।ইদানিং দেখা যায় কলেজগুলোতে প্রচুর পলিটিকাল ঝামেলা থাকে। এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে পড়াশোনার থেকে ডাইভার্ট হয়ে ভুল রাজনীতিতে জড়িয়ে না পরো। মনে রাখবে সময় কিন্তু কম। তাই একে নষ্ট হবার সুযোগ দেয়া যাবেনা। সেজন্য কলেজের মান ও পরিবেশ আগেই নিশ্চিত করতে হবে।
পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস তোমাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। তাই কলেজ জীবনে তোমাকে বিভিন্ন সহ শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত হতে হবে। সেটা হতে পারে বিতর্ক, খেলাধুলা, লেখালেখি সহ নানান কিছু। তাই তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে তোমার কলেজে এই ক্লাবগুলো আছে কিনা। বা সহ শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সুযোগ আছে কিনা।
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত দিক নির্দেশনা পেতে আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারো।
ইদানিং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। ক্লাস রুমগুলো আধুনিক হয়েছে বেশিরভাগ জায়গায়। তাই তোমার কলেজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তোমার নির্বাচিত কলেজটি আধুনিক কিনা?
তোমার ল্যাবে যথেষ্ট পরীক্ষণের সরঞ্জামাদি আছে কিনা?
মনে রাখবে আধুনিক ল্যাব এবং আধুনিক ক্লাসরুম কিন্তু তোমাকে অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে রাখবে।
তোমার কলেজ সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জানে কলেজে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা। তাই কলেজে ভর্তি হবার আগে, অথবা কলেজ চয়েজ দেবার আগে সেই কলেজের সিনিয়রদের সাথে অবশ্যই কথা বলে নেবে। কলেজের পরিবেশ পরিস্থিতি সবকিছু বুঝে নেবে। শিক্ষার পরিবেশ সরঞ্জামাদি ইত্যাদির সকল তথ্য তুমি সিনিয়রদের কাছ থেকে পেতে পারো। তাই এই ব্যাপারটা গুরুত্ব সহকারে দেখবে। চাইলে সিনিয়রদের তথ্য ক্রস চেক করে দেখতে পারো।
মোদ্দাকথা, কলেজ চয়েজ যেন তোমার হতাশার কারন না হয়ে যায়। সবার জন্য শুভকামনা। স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাও নিরলসভাবে।